বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন
মুফতীঃজহিরুল ইসলাম:
মাও:খলিলুর রহমান মিছবাহ:
কোরআনের আজমত পবিত্র মহাগ্রন্থ আল কুরআন আল্লাহ তাআলার বাণী।
মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তায়ালা কুরআনকে তাঁর প্রিয় রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নাযিল করেছেন।
যার বোঝা মানুষ ছাড়া কেউ বহন করতে স্বীকার করেনি, তাই আল্লাহ তাআলা মানব জাতির উপর কোরআনকে নাজিল করেছেন। তাইতো কুরআনের সাথে যে যে বস্তু বা ব্যক্তি সম্পর্ক রাখবে আল্লাহ তাআলা তার মর্যাদাকে বহুগুনে বাড়িয়ে দিবেন।
যেহেতু নুজূলে কোরআনের সাথে রমজানের সম্পর্ক রয়েছে তাই রমজানের ফজিলত এত বেশি। সুতরাং এর দ্বারা বুঝা যায় যে যার সাথে কোরআনের সম্পর্ক যত বেশি হবে তার মর্তবা ও মর্যাদা তত বেশি হবে।
চাই সে ফেরেশতা হোক নবী -রাসূল হউক বা অন্য কোন স্থান হোক বা কোন সময় হোক অথবা কোন ব্যক্তি হোক কোন বস্তু হোক যাই হোক না কেন কুরআনের সাথে যার যত বেশি সম্পর্ক হবে তার মর্যাদা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।
ফেরেশতার সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ায় ফেরেশতা জিবরাঈল আমিন সমস্ত ফেরেস্তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন। নবীর সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ায় নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমস্ত নবী-রাসূলগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছেন।
শহরের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ায় সে শহর মক্কা-মদিনা পৃথিবীর সমস্ত শহর থেকে শ্রেষ্ঠ শহর হয়েছে। যার কারণে এ শহর দুটির নাম নেওয়ার সময় অত্যন্ত সম্মানের সাথে বলা হয় মক্কাতুল মোকাররমাহ ও আল মাদিনাতুল মনোয়ারাহ। মাসির সাথে সম্পর্ক হওয়ায় সে মাস ১২ মাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাস হয়েছে।
সুতরাং যে ব্যক্তির সঙ্গে এই কোরআনের সম্পর্ক হবে ,যে এ কুরআন মুখস্থ করবে, এর তেলাওয়াত করবে, এর বিধি-বিধান মোতাবেক আমল করবে, কেয়ামতের ময়দানে তার মর্যাদা ও সকলের উপরে হবে।
আল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন” কেয়ামতের দিন কোরআনের হাফেজ কে বলা হবে পড়তে থাকো এবং চড়তে থাকো তার তিল সহকারে অর্থাৎ ধীরস্থিরভাবে স্পষ্ট করে বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে পড়ো যেমন তুমি দুনিয়ায় পড়তে জান্নাতে তোমার অবস্থান সেখানে হবে যেখানে তোমার পড়া শেষ হবে। (আবু দাউদ)
কোরআন শব্দের অর্থ হচ্ছে পড়া অর্থাৎ কুরআন নাযিল করা হয়েছে পড়ার জন্য আর মানার জন্য। অতএব আমাদের কাজ হল কোরআন পড়া এবং দৈনন্দিন জীবনে তা মানার চেষ্টা করা।
সমাজে অনেকের একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে কুরআন না বুঝে পড়লে কোন লাভ নেই অথচ আল্লাহর হাবীব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ঘোষণা করেছেন যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করল সে একটি নেকি লাভ করল এবং একটি নাকি দশটি নেকি সমতুল্য হবে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন আমি এটা বলি না যে আলিফ লাম মিম একটি হরফ বরং আলিফ একটি হরফ লাম একটি হরফ মিম একটি হরফ। (শুনানে তিরমিজি)
অর্থাৎ আলিফ লাম মিম তিনটি হরফের সমন্বয়ে একটি শব্দ। এই একটি মাত্র শব্দ পাঠ করলে ত্রিশটি নেকি পাওয়া যাবে। আর রমজানের প্রত্যেক একে ৭০। সে হিসেবে মাহে রমজানের কোরআনের একটি হরফ পাঠ করলে সাতশত নেকি পাওয়া যাবে।
এই হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে এটা কুরআনের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য যে বুঝে পড়ুক, আর না বুঝেই পড়ুক, তেলাওয়াত শুদ্ধ হলেই এই বিশাল নেকির ভান্ডার লাভ করা যাবে।
তাই বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজে আইন বা অপরিহার্য কাজ।